লিসবন, ১ সেপ্টেম্বর : উপযুক্ত চিকিৎসা পরিষেবার অভাবে পর্তুগালে মৃত্যু হল এক ভারতীয় অন্তঃসত্ত্বার। উপযুক্ত চিকিৎসা পরিকাঠামো না থাকার কারণে লিসবনের এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত হওয়ার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৪ বছর বয়সী ওই গর্ভবতী ভারতীয় পর্যটকের মৃত্যু হয় । এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেই পদত্যাগ করলেন সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মার্তা তেমিদো। দেশে প্রবল সমালোচনার মুখে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। স্থানীয় মিডিয়া সূত্রে জানা গিয়েছে যে, পর্তুগালে জরুরী যত্ন পরিষেবা বন্ধ, হাসপাতালে ডাক্তারের অভাব এবং জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার সমস্যার প্রতিক্রিয়া জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। জরুরী প্রসূতি পরিষেবা বন্ধের কারণে তীব্র সমালোচনার পরে টেমিডো পদত্যাগ করেন।
জানা গিয়েছে মৃত ওই ভারতীয় মহিলা ৩১ সপ্তাহের গর্ভবতী ছিলেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় তাকে সান্তা মারিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পরে, পর্তুগালের অন্যতম বৃহত্তম এই স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র থেকে তাকে সাও ফ্রান্সিসকো জেভিয়ার হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে। সান্তা মারিয়া হাসপাতালে নবজাতক বিভাগ পূর্ণ ছিল। সেই কারণে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু স্থানান্তর হওয়ার পথেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন ওই মহিলা। দ্বিতীয় হাসপাতালে, তার একটি সি-সেকশন করা হয়। ওই মহিলার মৃত্যু হলেও নবজাতকটি নবজাতক কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয় বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে ওই মহিলার মৃত্যুর তদন্ত শুরু হয়েছে।
পর্তুগালের কোভিড পরিস্থিতি দক্ষ হাতে সামলেছিলেন মার্তা। কোভিডের সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর কাজ প্রশংসিত হয়েছিল নানা মহলে। কিন্তু কিছু দিন আগে প্রসূতি বিভাগের জরুরিকালীন পরিষেবা সাময়িক বন্ধের সিদ্ধান্ত মার্তাকে বিতর্কের মুখে ঠেলে দেয়। পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তোনিয়ো কোস্তা জানিয়েছেন, তিনি মার্তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তবে মার্তাকে তাঁর কাজের জন্য ধন্যবাদও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সঙ্গে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
মার্তা টেমিডো কোভিড -১৯ মহামারী চলাকালীন সফলভাবে দেশের ভ্যাকসিন রোলআউট পরিচালনার জন্য কৃতিত্ব পেয়েছেন। কিন্তু ডাক্তারের অভাবের কারণে অস্থায়ীভাবে জরুরী প্রসূতি পরিষেবা বন্ধ করার সিদ্ধান্তের জন্য প্রবল সমালচনার সম্মুখীন হয়েছেন তিনি। সরকার বলেছে যে মার্তা টেমিডো 'বুঝতে পেরেছেন যে তার আর পদে থাকার জায়গায় নেই'।
মার্টা টেমিডো, ২০১৮ সালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন সেন্ট্রাল-লেফট সমাজতান্ত্রিক সরকারের অন্যতম জনপ্রিয় সদস্য ছিলেন। পর্তুগালের লুসা নিউজ এজেন্সির মতে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ওই মহিলার মৃত্যু টেমিডোর পদত্যাগকে ত্বরান্বিত করে।