দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রিয়াল মাদ্রিদের চলতি মৌসুমটা একরকম হতাশায় কেটেছে। কোপা দেল রে জিতলেও বড় দুই প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়নস লিগ ও লা লিগাতে দর্শকের সারিতেই থাকতে হয়েছে রিয়ালকে। চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনালে উঠে সম্ভাবনা জাগালেও সেখানেই শেষ হয়েছে রিয়ালের যাত্রা। চলতি মৌসুমটা ব্যর্থতায় পার করায় এখন নতুন মৌসুম সামনে রেখে বেশ মনোযোগী রিয়াল কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে আক্রমণভাগ নিয়ে আলাদাভাবে ভাবছে তারা। যেখানে নতুন খেলোয়াড় যোগ করতে বেশ মরিয়া অবস্থান নিয়েছে ক্লাবটি। সব মিলিয়ে রিয়াল আক্রমণের অবস্থা কেমন এবং আগামী মৌসুমে কেমন চেহারা নিতে পারে, তা দেখে নেওয়া যাক।
রিয়ালের স্কোয়াডে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়টি সম্ভবত ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তবে গুরুত্বে উনিশ–বিশ হলেও সবেচেয়ে আলোচিত খেলোয়াড় যে ভিনিসিয়ুস, সে নিয়ে কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়। পাশাপাশি এই মৌসুমে সবচেয়ে সফল খেলোয়াড়ও হলেন ভিনি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২৩ গোলের পাশাপাশি করেছেন ২১টি অ্যাসিস্টও। রিয়াল ড্রেসিংরুমে, কোচিং স্টাফদের মধ্যে এবং ক্লাব কর্তৃপক্ষের মধ্যে তাঁকে ধরে রাখা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বর্ণবাদী আক্রমণের শিকার হয়ে ভিনি ঠিকই ক্লাব ছাড়ার কথা ভেবেছেন। যদিও শেষ পর্যন্ত ভিনি হয়তো রিয়াল ছেড়ে কোথাও যাবেন না। আগামী মৌসুমেও দলের আক্রমণে অন্যতম ভরসা হয়ে মাঠে নামবেন। তবে রিয়ালের প্রত্যাশা থাকবে ভিনি যেন তাঁর মনোযোগও মাঠে রাখেন। নয়তো তাঁর কাছ থেকে পুরোটা বের করে আনতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হতে পারে রিয়াল কোচকে।
এ মৌসুমের রিয়ালের আক্রমণের অন্যতম তারকা ছিলেন রদ্রিগো। দলকে শিরোপা এনে দিতে ব্যর্থ হলেও মাঠে ঠিকই পারফরম্যান্সে মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান তারকা। ১৯ গোল করে তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলাদাতাও রদ্রিগো। পাশাপাশি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০টি অ্যাসিস্টও এসেছে তাঁর কাছ থেকে। দলে তাঁর অবস্থান নিয়ে কোচ আনচেলত্তিরও কোনো সন্দেহ নেই। যাঁকে রিয়াল কোচ কখনো রাইট উইং, কখনো ‘ফলস নাইন’ এবং কখনো দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবে ব্যবহার করেছেন। কোপা দেল রের ফাইনালে ওসাসুনাকে হারিয়ে শিরোপা জয়ের পথে ম্যাচসেরাও হয়েছিলেন এই তরুণ তুর্কি। আগামী মৌসুমেও রিয়ালের আক্রমণভাগের অন্যতম ভরসা হবেন রদ্রিগো।
আসেনসিওকে রিয়াল চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু আসেনসিও চুক্তি নবায়ন না করে আসছে দলবদলেই ক্লাব ছাড়তে চান। মূলত দলে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়ার কারণেই ক্লাব ছেড়ে যেতে চান ২৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। তাঁর সম্ভাব্য গন্তব্য হিসেবে অ্যাস্টন ভিলা এবং পিএসজির কথা শোনা যাচ্ছে।
মারিয়ানো দিয়াজ আচরণগত সমস্যা ও পারফরম্যান্সের ঘাটতির কারণে এ মৌসুম শেষেই রিয়াল ছেড়ে যাবেন দিয়াজ। রিয়ালও তাঁকে রেখে দেওয়ার ব্যাপারটি বিবেচনা করেনি। তাই এই সেন্টার ফরোয়ার্ডকে এখন নতুন গন্তব্যেই আপাতত চোখ রাখতে হচ্ছে।
আগামী মৌসুমে স্কোয়াডকে শক্তিশালী করতে এরই মধ্যে আক্রমণভাগের একাধিক তারকার ওপর চোখ রেখেছে রিয়াল। যাদের মধ্যে সবার আগে আসছে জুড বেলিংহামের নাম। বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের এই ইংলিশ তারকার সঙ্গে রিয়ালের চুক্তি ঘোষণা নাকি শুধুই সময়ের ব্যাপার। বেলিংহাম আসলে সেটি রিয়ালের আক্রমণভাগকে আক্ষরিক অর্থেই সমৃদ্ধ করবেন। নিজের দিনে যেকোনো শক্তিশালী রক্ষণকে একাই শেষ করে দিতে পারেন বেলিংহাম।
শুধু বেলিংহামই নন, এই মৌসুমে আরও এক ইংলিশ স্ট্রাইকারের ওপর চোখ আছে রিয়ালের। তিনি আর কেউ নন, ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমেও লিগে একাই ৩০ গোল করে আলোচনায় এসেছেন কেইন। তবে টটেনহামের ঘরের ছেলে এখন ঘর ছেড়ে বাইরে যেতে চান। প্রিমিয়ার লিগের বাইরে গেলে তাঁকে আটকাবে না স্পাররাও। তাই আগামী দিনগুলোতে মাদ্রিদে তাঁর নতুন যাত্রার খবর এলে তা মোটেই অবাক করা ব্যাপার হবে না।
কেইন না এলে রিয়ালের আক্রমণভাগেও দারুণ বৈচিত্র্য আসবে। কেইন ও বেলিংহামের বাইরে ব্যাকআপ তারকা হিসেবে লাওতারো মার্তিনেজ এবং রবার্তো ফিরমিনোর নামও নাকি রিয়ালের তালিকায় আছে। যদিও এসব আলাপ এখনো প্রাথমিক পর্যায়েই আছে। চূড়ান্ত খবর জানতে আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।