আমেদাবাদ, ১৮ নভেম্বর : বিশ্বকাপের আগে ভারতের দুশ্চিন্তা ছিল রান পাচ্ছিলেন না অধিনায়ক রোহিত শর্মা কিংবা কেএল রাহুলরা। এ ছাড়া মিডল অর্ডারে আস্থার প্রতিদান দিতে পারছিলেন না আইয়ার, সূর্যকুমার যাদবরাও। তবে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলতে নেমে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন প্রথম পাঁচ ব্যাটার। রোহিত, শুভমন ভালো শুরু করছেন। পরের দিকে কোহলি, শ্রেয়স আয়ার, কেএল রাহুলরাও রান পাচ্ছেন। কিন্তু ফাইনালে যদি প্রথমদিকের কয়েকজন ব্যাটসম্যান ব্যর্থ হন, তাহলে ভারত চাপে পড়বে। কারণ বিশ্বকাপে এখনও রবীন্দ্র জাদেজা তেমন পরীক্ষার মুখে পড়েনি। এ ছাড়া ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন নির্ভরযোগ্য হার্দিক পান্ডিয়া। শেষের দিকে ব্যাটিংয়ে তার জুড়ি মেলা ভার।
তাছাড়া এবারের বিশ্বকাপে ভারতের সাফল্যের অন্যতম কারণ বোলিং ইউনিট। বুমরাহ-শামিরা-সিরাজ-জাদেজা-কুলদীপ প্রত্যেকেই প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের তেমন খেলার সুযোগই দিচ্ছেন না। বিশেষ করে শামি প্রথম দুটি ম্যাচের পর দলে ফিরে দুরন্ত ফর্মে আছেন। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ(২৩) উইকেট সংগ্রাহকও তিনি।তবে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকতে পারে মোহাম্মদ সিরাজের খরুচে বোলিং নিয়ে। বিশ্বকাপে ১৩টি উইকেট রয়েছে। কিন্তু ইকোনমি রেট ভাল নয়।
এখনো না হলেও যেটা চিন্তার তাহল ষষ্ঠ বোলারের অভাবটাও। এই অভাবটাই ভোগাতে পারে ভারতকে। ষষ্ঠ বোলারের ভারতকে পেতে হয়েছে নিউজিল্যান্ড ম্যাচ। কেন উইলিয়ামসন এবং ড্যারিল মিচেল ক্রিজে থাকার সময় বেশ চাপে ছিলেন রোহিত শর্মা। এ কথা পরে স্বীকারও করেছেন তিনি। হাতে থাকা পাঁচ বোলার দিয়ে কাজ হচ্ছিল না তখন হার্দিক পান্ডিয়ার অভাবটা ভালোভাবে অনুভব হচ্ছিল। এমনকি নেদারল্যান্ডস ম্যাচে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, শুভমান গিলও বল করেছিলেন। কিন্তু নিউজিল্যান্ড মোটেই নেদারল্যান্ডস ছিল না। আত্মঘাতী ঝুঁকি রোহিত নিতে চাননি। শামি পরে দলকে জেতালেও, ফাইনালে কোনো এক বা দু’জন বোলারের দিন খারাপ গেলে চাপে পড়তে পারে ভারত।
আর এবারের বিশ্বকাপে ফিল্ডিংয়ে ভালো করতে অভিনব এক প্রতিযোগিতা আয়োজন করছে ভারত। প্রতি ম্যাচের সেরা ফিল্ডারকে দেওয়া হচ্ছে মেডেল। যার ফলাফলও দেখা যাচ্ছে মাঠে। জাদেজা, ইশান কিষাণ কিংবা বিরাট কোহলিরা দারুণ ফিল্ডিং করছেন। তবে সেমিফাইনালে কিউইদের বিপক্ষে ক্যাচ ফেলা, ফিল্ডিং মিস, ওভার থ্রোয়ে রান দেওয়াটা খুবই খারাপ লেগেছে। স্কোরবোর্ডে বড় রান থাকায় চাপটা কম ছিল, কম রান হলেই চাপটা বাড়তো।
এ ছাড়া বিশ্বকাপের মতো ম্যারাথন আসরে টানা দেড় মাসের জার্নি চলছে। রাউন্ড রবিন লিগের ম্যাচগুলো খেলতে হয়েছে আলাদা আলাদা শহরে। এরজন্য ক্রিকেটারদের কয়েক হাজার কিলোমিটার যাতায়াত করতে হয়েছে। এত যাতায়াত আর কোনো দলকে করতে হয়নি। পাশাপাশি ইনজুরিতে কেউ পড়েননি। গত ৫টি ম্যাচে একই দল নামিয়েছে ভারত। ফাইনালে ক্লান্তি গ্রাস করতে পারে ক্রিকেটারদের। আর সেখানেই ঘটতে পারে বিপদ।