লখিমপুর খেরি, ১৫ সেপ্টেম্বর : উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল দুই নাবালিকার দেহ। দুই নাবালিকাই দলিত, ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় দুই নাবালিকাকে। এরপর তাঁদের দেহ গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে প্রধান দুই অভিযুক্ত-সহ ৬ অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরুণ কুমার সিং জানিয়েছেন, ৬ অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে। লখিমপুর খেরির পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন জানিয়েছেন, অপরাধের সঙ্গে জড়িত মোট ৬ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা হল- ছোটু, জুনায়েদ, সোহেল, হাফিজুল, করিমুদ্দিন ও আরিফ। অভিযুক্ত জুনায়েদকে একটি এনকাউন্টারে গ্রেফতার করা হয়েছে, তার পায়ে গুলি লেগেছে।
বৃহস্পতিবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলনে পুলিশ সুপার সঞ্জীব সুমন জানিয়েছেন, অভিযুক্তরা মৃত নাবালিকাদের বন্ধু ছিল। সোহেল ও জুনায়েদ দুই নাবালিকাকে নিয়ে চাষের জমিতে যায়, সেখানে ধর্ষণ করা হয়। দুই নাবালিকে অভিযুক্তদের বিয়ে করার জন্য জোর করে। এরপর সোহেল, হাফিজুল ও জুনায়েদ তাঁদের শ্বাসরোধ করে খুন করে। পরে করিমুদ্দিন ও আরিফকে ডেকে এনে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার জন্য দুই নাবালিকে গাছে ঝুলিয়ে দেয়। পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, ছোটু ছাড়া বাকি সবাই লখিমপুর খেরির লালপুর গ্রামের বাসিন্দা। মেয়েদের প্রতিবেশী ছোটু ওই দুই মেয়েকে অভিযুক্তদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। তাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই জানা গিয়েছে, ৩ জন ডাক্তারের একটি প্যানেল ময়নাতদন্ত করছে... মামলাটি মেয়েদের বিরুদ্ধে এবং সমাজের একটি দুর্বল অংশের বিরুদ্ধে। আমরা দ্রুততা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে কাজ করেছি। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২, ৩৭৬ ও পকসো আইনে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার উদ্ধার হয় ওই দুই নাবালিকার ঝুলন্ত মৃতদেহ। একটি গাছ থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতেরা দলিত পরিবারের সদস্য। খবর পেয়ে নিঘাসন থানার পুলিশ তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মৃতদেহগুলিকে ইতিমধ্যেই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। লখনউ রেঞ্জের আইজি লক্ষ্মী সিং জানিয়েছেন, দুই নাবালিকার শরীরে আঘাতের কোনও চিহ্ন ছিল না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই সবকিছু পরিষ্কার হবে। ওই দুই নাবালিকার মা জানিয়েছেন, মোটরসাইকেলে করে কিছু জন লোক তাঁর মেয়েদের অপহরণ করে নিয়ে যায়। নাবালিকাদের ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলেও পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মৃত নাবালিকাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজার দাবি জানিয়েছেন।