দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রেমাল পরবর্তী বৃষ্টিতে অসম, মণিপুরে বন্যা। অবস্থা শোচনীয়। বন্যায় এখনও পর্যন্ত অসমে ১৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ছয় লাখের বেশি মানুষ। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে রাজ্য ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। শোচনীয় মণিপুরের অবস্থাও। সেখানে একাধিক জনের মৃত্যু হয়েছে, আহতও একাধিক। মণিপুরে জলের তলায় সরকারি ভবনও।
লাগাতার বৃষ্টির জেরে অসম, মণিপুরে বন্যা। মণিপুরে আটটি জেলার ৩৪৮টি গ্রামও ও শহুরে এলাকায় প্রায় দুই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জল ঢুকে গিয়েছে সরকারি কার্যালয়েও। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেডিক্যাল কলেজ ও সরকারি অফিস সহ একাধিক ভবন জলমগ্ন। প্লাবিত মুখ্যমন্ত্রী এন. বীরেন সিংয়ের ব্যক্তিগত বাসভবনও। কোনও হোটেলে হাঁটু জল, কোনও হোটেলে আবার কোমর পর্যন্ত জল। রাজভবন চত্বর, গভর্নরের অফিস এবং সেক্রেটারিয়েট, স্টাফ কোয়ার্টার এবং নিরাপত্তা কর্মীদের থাকার জায়গাতে জল থই থই অবস্থা।
ঘূর্ণিঝড় রিমেলের পরে অবিরাম বৃষ্টিতে ভাসছে মণিপুর। রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ, ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, কাংপোকপি, বিষ্ণুপুর, ননি, চুরাচাঁদপুর, সেনাপতি এবং কাকচিং-এর পাহাড় ও উপত্যকা এলাকায় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে। মণিপুরে বন্যায় এখনও পর্যন্ত তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন বহু মানুষ। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স ছাড়াও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, সেনা, আসাম রাইফেলস এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় বাহিনী ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চালাচ্ছে। ৫৬টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে। ২০ হাজারের বেশি মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। ৪৩৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি পার্বত্য জেলায় ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। একাধিক নদী বাঁধ ভেঙে গিয়েছে।
অন্যদিকে, বন্যা বিধ্বস্ত অসমও। ১০টি জেলার ছয় লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে রবিবার। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে বেড়েছে নদীর জলস্তর। ক্ষতিগ্রস্ত বহু মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে কপিলি, বরাক ও কুশিয়ারা নদীর জল। হাইলাকান্দি হেজাই, মরিগাঁও, করিমগঞ্জ, নগাঁও, কাছাড়, ডিব্রুগড়, গোলাগাঠ, কার্বি আংলং পশ্চিম ও ডিমা হাসাও জেলা মিলিয়ে ছয় লাখের উপর মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ২৮ মে থেকে বন্যা ও ঝড়ে মৃতের সংখ্য়া ১৫ ছাড়িয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নগাঁও জেলা। এই জেলায় দুর্গতদের সংখ্য়া দুই লাখেরও বেশি। এরপরেই রয়েছে হোজাই ও কাছাড়। ঘরছাড়া হয়েছেন ৪০ হাজারের বেশি মানুষ। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরে। NDRF, SDRF, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণ সহ একাধিক সংস্থার দ্বারা উদ্ধারকাজ ও ত্রাণের কাজ করা হচ্ছে। রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ব্যাহত সড়ক ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা। নিউ হাফলংয়ের চন্দ্রনাথপুর বিভাগের মধ্য়ে ক্ষতি হয়েছে ট্র্যাকের। জলমগ্ন লুমডিং বিভাগের শিলচর স্টেশন। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলওয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত একাধিক পূর্বনির্ধারিত ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।