গুয়াহাটি : ২০২৪-২৫ অর্থবৰ্ষের বাজেট সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূৰ্ণ সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে অসম মন্ত্রিসভার বৈঠকে।মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মার পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত রাজ্য ক্যাবিনেটের বৈঠকে এমন একটি বিলের অনুমোদন দিয়েছে যার লক্ষ্য, কুয়াক বা কালাজাদুর সঙ্গে জড়িত অপরাধীকে শাস্তি প্রদান।
সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষদীয় মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া ক্যাবিনেট বৈঠকের নিৰ্যাস দিতে গিয়ে বলেন, রোগ নিরাময়ে চিকিৎসার নামে ধান্ধা বা ঠগবাজি বন্ধ করতে রাজ্য সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে। জন্য আসাম হিলিং (প্রিভেনশন অব ইভিল) প্র্যাকটিস বিল ২০২৪-এ সম্মতি দিয়েছে মন্ত্ৰিসভা। এই বিলের মাধ্যমে কালাজাদুর বলে চিকিৎসা করে রোগ নিরাময়ের নামে বেআইনি কাজের সঙ্গে জড়িত দোষী সাব্যস্ত যে কোনও ব্যক্তি কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
এছাড়া প্রস্তাবিত বিলে বধিরতা, মূক, অন্ধত্ব, শারীরিক বিকলাঙ্গ, অটিজম ইত্যাদির মতো কিছু জন্মগত রোগের চিকিৎসার নামে জাদুকরী নিরাময়ের অভ্যাসগুলিকে নিষিদ্ধ ও নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ ধরনের নিরাময় ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি চিকিৎসার নামে দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষের কাছ থেকে চাঁদাবাজ 'নিরাময়কারীদের' বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রদান করবে এই বিল।
জয়ন্তমল্ল জানান, মন্ত্রিসভা আজ গ্রামরক্ষা সংস্থার উন্নতির জন্য অসম গ্রাম প্রতিরক্ষা সংস্থা (সংশোধনী) বিল, ২০২৪-এ অনুমোদন দিয়েছে। বিলটি অসম গ্রাম প্রতিরক্ষা সংস্থার বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের নির্দিষ্ট সংজ্ঞা, কর্তব্য, ক্ষমতা এবং কার্যাবলী সম্পর্কিত অসম গ্রাম প্রতিরক্ষা সংস্থা আইন, ১৯৬৬ সংশোধন করতে আনা হয়েছে।ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভা দক্ষ নগর প্রশাসনের জন্য আসাম মিউনিসিপ্যাল অ্যাক্ট ১৯৫৬-এর সংশোধনী বিলেরও অনুমোদন দিয়েছে। প্রস্তাবিত বিলটি তিনটি স্টেট মিউনিসিপ্যাল ক্যাডারের ভূমিকা এবং দায়িত্বগুলিকে সংজ্ঞায়িত করতে চায় যেমন, আসাম আরবান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস, আসাম আরবান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস এবং আসাম আরবান ফিনান্সিয়াল সার্ভিস শহুরে স্থানীয় সংস্থাগুলির (ইউএলবি) অনুমোদিত স্টাফিং প্যাটার্নের মাধ্যমে পুরসভাগুলিতে কর্মী নিয়োগের পদ্ধতির মাধ্যমে নিম্নলিখিত সমস্যাগুলির সমাধান করে। এ ধরনের মিউনিসিপ্যাল অফিসারদের নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলী, নির্বাহী অফিসারের ক্ষমতা ও কার্যাবলী (আরবান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস) এবং আরবান ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস এবং আরবান ফিনানশিয়াল সার্ভিসের ভূমিকা ও দায়িত্বের জন্য প্রণয়নকৃত নিয়ম।
এছাড়া টেকসই নগর উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এক শহর প্রকল্প রূপায়ণে ক্যাবিনেটের অনুমোদন পাওয়া গেছে। সে অনুয়ায়ী টেন সিটি ডেভেলপমেন্ট কনসেপ্ট (দো শহর এক রূপায়ণ)-এর জন্য মন্ত্রিসভা সম্মতি প্রদান করেছে। দশটি শহর যথাক্ৰমে তিনসুকিয়া, ডিব্রুগড়, শিবসাগর, যোড়হাট, গোলাঘাট, নগাঁও, তেজপুর, উত্তর-লখিমপুর, বঙাইগাঁও, শিলচর, করিমগঞ্জ, ধুবড়ি এবং হাফলং/ডিফু। এগুলি রাজ্যের অন্যান্য নগর স্থানীয় সংস্থাগুলির জন্য 'লাইট হাউজ' হবে।ধারণাটির বাস্তবায়ন করতে মন্ত্রী, আবাসন ও নগর বিষয়ক বিভাগের সভাপতিত্বে রাজ্যস্তরের স্টিয়ারিং কমিটি এবং সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা কমিশনারের সভাপতিত্বে একটি শহরস্তরের স্টিয়ারিং কমিটি কর্তৃক পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করা হবে।
মন্ত্ৰিসভার বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের আরও তথ্য দিতে গিয়ে মন্ত্রী জয়ন্তমল্ল বরুয়া জানান, প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য অসম সচিবালয় পরিষেবা এবং অসম সচিবালয় অধস্তন পরিষেবায় অতিরিক্ত পদ তৈরি করা হবে। অসম সচিবালয়ে কম্পিউটার অপারেটর (সিও) এবং সিনিয়র গ্রেড কম্পিউটার অপারেটরদের (এসআর জিআর সিও) ক্যাডারগুলি বিলুপ্ত করার পাশাপাশি সব মিলিয়ে মোট ৩৫২টি পদ তৈরি করা হবে।
এছাড়া ডিব্ৰুগড়ের মলনামদং সংরক্ষিত বনাঞ্চলে স্থাপন হবে মুক্ত চিড়িয়াখানা। প্রস্তাবিত চিড়িয়াখানার জন্য ২৫৯ কোটি টাকার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি জানান, চিড়িয়াখানার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হবে ৫০ হাজার মানুষের। পৰ্যটন ক্ষেত্ৰের জন্য এই সিদ্ধান্ত অতি গুরুত্বপূৰ্ণ বলে জানিয়ে মন্ত্রী জানান, থাইল্যান্ডের আদলে স্থাপন হবে মুক্ত চিড়িয়াখানাটি।এভাবে অসম সংগীত আইনেও অনুমোদন দিয়্ছে রাজ্য ক্যাবিনেট।