দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিং করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরুর ১৮ জন-সহ ২২ জনের একটি দল। দু’দিন ধরে তল্লাশি অভিযান শেষে ১৩ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই দলের ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৬ জন মহিলা ও ৩ জন পুরুষ।
এর মধ্যে রয়েছেন ৭১ বছরের আশা সুধাকরও। তিনি কর্নাটকের অন্যতম বর্ষীয়ান ট্রেকার। তাঁর স্বামী এস সুধাকর অবশ্য কোনও ভাবে বেঁচে গিয়েছেন। এই মৃত্যু প্রসঙ্গে ‘কর্নাটক মাউন্টেনিয়ারিং অ্যাসোসিয়েশন’ (KMA)-এর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যাঁরা গিয়েছিলেন প্রত্যেকেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ট্রেকার। আর আশা তো সবচেয়ে বেশি অভিজ্ঞ। পাহাড়ের উচ্চতাও ছিল ১৫ হাজার ফুটের মতো। এর থেকে অনেক বেশি উঁচুতে ওঠার অভিজ্ঞতা ওঁদের প্রত্যেকের রয়েছে। এই উচ্চতায় তো ট্রেকিংয়ে প্রশিক্ষণ না থাকলেও ওঠা সম্ভব।’
তিনি এ-ও জানান, উত্তরাখণ্ডেরই একটি স্থানীয় সংস্থা উত্তরকাশী-তেহরি সীমানায় সহস্ত্র তাল অভিযানের আয়োজন করেছিল। সেটা KMA করেনি। তাঁর কথায়, ‘কী ভাবে এই মৃত্যু হয়েছে, সেটা আমরা বিস্তারিত জানতে চেষ্টা করছি।’ স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, গত ২৯ মে সহস্ত্র তাল অভিযানে গিয়েছিলেন ২২ জন। তাঁদের মধ্যে তিন জন স্থানীয় গাইড ও ১ জন মহারাষ্ট্রের। বাকিরা সকলেই কর্নাটকের।
উত্তরকাশীর এসএসপি অর্পণ যদুবংশী জানিয়েছেন, পাহাড়ের ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় ওঠার পর নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল দলটি। ৭ জুন তাদের ফেরার কথা ছিল। উত্তরকাশীর জেলাশাসক মেহেরবান সিং বিস্ত জানিয়েছেন, খারাপ আবহাওয়ার জন্য মঙ্গলবার বিকেল ৪টের সময় ওই দলটি কুরফিতে আটকে পড়ে।
জেলাশাসক ও এসএসপি জানান, উত্তরাকাশী এবং তেহরি বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্রের কাছে খবর পৌঁছতেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর একটি দল উদ্ধারকাজে নামে। যেখান থেকে ট্রেকিং শুরু হয়েছিল, সেই কুশ কল্যাণ বেস ক্যাম্পে যায় বিপর্যয় মোকাবিলা দল। পৌঁছে যায় নেহরু ইনস্টিটিউট মাউন্টেনিয়ারিংয়েরও একটি দল।
তল্লাশি অভিযান এবং উদ্ধারকাজের জন্য দু’টি হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়। উদ্ধারকাজে নামে বায়ুসেনাও। মঙ্গলবার থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আর দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় উদ্ধার করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। দু’দিন ধরে উদ্ধারকাজ চালিয়ে ১৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবারেই পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। বৃহস্পতিবার আরও চার জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।